বগুড়ার ধুনটে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে স্ত্রীর দেখা না পেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন গার্মন্টস কর্মী শফিকুল ইসলাম (৩০)। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্ত্রী শ্যামলী খাতুন (৩০)। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর সময় স্বামীর মৃত্যু হলে হাসপাতাল গেটে মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যান স্ত্রী। শুক্রবার (২ জুন) দুপুরের পর শফিকুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত শফিকুল ইসলাম গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার বজরুক জামালপুর গ্রামের মুন্টু আকন্দের ছেলে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাদাই গ্রামের আলতাব হোসেনের মেয়ে শ্যামলী খাতুন ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সেখানে প্রেমের সম্পর্ক থেকে প্রায় ৩ বছর আগে শফিকুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর ওপর অভিমান করে ১৫দিন আগে কাদাই গ্রামে বাবার বাড়িতে আসেন শ্যামলী। বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বশুর বাড়িতে আসলে স্ত্রী তার সঙ্গে সাক্ষাত করেননি। ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও স্ত্রীর সাক্ষাত মেলেনি।
এক পর্যায়ে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন জামাইকে হালকা আপ্যায়ন করান। এসময় পানি পান করে অচেতন হয়ে পড়েন শফিকুল। খবর পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে ফিরে স্বামীকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন শ্যামলী। শফিকুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মেডিকেলে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর সময় স্বামীর মৃত্যু হলে হাসপাতাল গেটে লাশ ফেলে পালিয়ে যান শ্যামলী। জানতে পেরে শ্যামলীর পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পলাতক রয়েছেন। ফলে এ বিষয়ে কারো কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে নিহত শফিকুলের ভাই রফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে শফিকুলের বেশ কিছু টাকা পাওনা আছে। পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারা আমার ভাইকে পানির সঙ্গে কৌশলে বিষাক্ত পদার্থ মিশিয়ে সেবন করিয়েছেন। ফলে সে অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার নামে হাসাপাতালের গেটে লাশ ফেলে পালিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত শ্যামলী খাতুন তার স্বামীর সঙ্গে ছিল। কিন্ত মৃত্যুর পর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছে। ঘটনার পর শ্যামলী ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। মৃতদেহর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।